মিঠিকাহিনী (আমার খুদে কন্যার কথামৃত)

Anirban & Arijit, Conversation, Dad & Daughter, Humor, School, Tiny Story, বাংলা, মিঠিকাহিনী

মিঠিকাহিনী – ১ (লন্ডন যাত্রা)

– মিঠি, আমি আবার লন্ডন যাচ্ছি।
– তোমার ছুটি শেষ বাবাই?
– হ্যাঁ রে, আবার আপিস।
– এবারে আমার জন্য একটা ভোলু আর একটা চিপ্স আনবে হ্যাঁ।
– আচ্ছা। কিন্তু আমার যখন মিঠির জন্য মন কেমন করবে, তখন আমি কি করব?
– তখন তুমি তিন্নি কে আদর কোরো।

(তিন্নি হল মিঠির সমবয়সী, আমার লন্ডননিবাসী বন্ধুর মেয়ে)

মিঠিকাহিনী – ২ (মিঠির বেবি)

– ওয়াট ইস ইয়োর নেম মিঠি?
– মাই নেম পীহুনা গাঙ্গুলি।
– বাব্বা, কত বড় নাম!
– জানো তো বাবাই, আমি যখন বড় হয়ে যাব, তখন আমারও তো একটা বেবি হবে। ওর কি নাম দেওয়া যায় বলো তো?
– কি নাম দিবি বল তো?
– আমি একটা ভেবেছি, অহনা।
– আরিব্বাস, পীহুনার মেয়ে অহনা! আচ্ছা মিঠি, আমি তাহলে অহনার কে হবো?
– দাদান। তুমি অহনা কে স্কুটারে করে স্কুলে নিয়ে যাবে।
– ওকে, আর তোর মাম্মা অহনার কে হবে?
– দিদান।
– আচ্ছা, এবার আসল প্রশ্ন, অহনার বাবা কে হবে?
– জানি না।
– ওকে, তাহলে বল অহনার বাবা কার মতন হবে।
– ঠিক তোমার মতন।

মিঠিকাহিনী – ৩ (ইনজিরি)

– বাবাই বাবাই, গান চালিয়ে নাচবে?
– ইংলিশে বল।
– ভাভাই, ঘান ছালিয়ে ওয়াক্সফ্রবার্ক্সট্রেন্সিক,….. নাচবে?
– এটা কেমন ইংলিশ হল?
– হল তো। আমি হাতে মাম্মার সেন্ট মেখেছি, শুঁকে দেখো।
– ওয়াট ইস দিস মিঠি?
– দিস ইস গন্ধ।

মিঠিকাহিনী – ৪ (কাক ও কলসী)

– শোন্ মিঠি একটা গল্প বলি।
– কিসের গল্প বলবে বাবাই?
– একটা কাকের গল্প। একটা কাকের একদিন খুব জলতেষ্টা পেয়েছিল……. কলসীর একদম তলায় জল…….. মুখে করে নুড়ি নিয়ে নিয়ে ফেলল…….. জল ওপরে উঠে এল আর কাকটা জল খেয়েই ফুরুত।
– দাঁড়াও, মাম্মা কেও বলে আসি গল্প টা।
.
.
– মাম্মা জানো তো একটা না কাক ছিল। কাকটার খুব জলতেষ্টা পেয়েছিল। একটা কলসী পেল, তার খুব নীচে জল ছিল।
– কি করে খেল সেই জল?
– কাকটা অনেক খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ একটা স্ট্র পেল, সেটা দিয়ে জল খেয়ে ফুরুত।

মিঠিকাহিনী – ৫ (থ্রেট)

~ প্রথম দিন ~

– বাবাই, মশারি টা টাঙিয়ে দাও, মাম্মা তো কতক্ষণ ধরে বলছে, আমি তো শোব নাকি!
– হ্যাঁ, যাচ্ছি।
– তখন থেকে যাচ্ছি যাচ্ছি করেই যাচ্ছ, কিন্তু করছ না।
– এই তো এবার যাব।
– বাবাই, চলো বলছি।
– হ্যাঁ, এই তো, আর দু মিনিট।
– বাবাই!!

শেষের চিৎকার টার সাথে বোনাস পেলাম মিঠির আঙুলের নখ দিয়ে আমার নাকের ওপর আঁচরের একটা টাটকা দাগ।

~ দ্বিতীয় দিন ~

– কিগো শুনছ, মশারি টা টাঙিয়ে দাও, মিঠি তো শোবে।
– হ্যাঁ, এই করছি।
||
– বাবাই, শুনলে তো মাম্মা কি বলছে। মশারি টা করবে না?
– হ্যাঁ করব তো।
– কালকে আঙুল দিয়ে একটা জিনিস করে দিয়েছিলাম তোমার নাকে, তোমার ভালো লেগেছিল?

মিঠিকাহিনী – ৬ (দোতলা বাস ও একটি মাছ)

– জানিস তো মিঠি লন্ডনে না বাসের দুটো তলা থাকে, সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হয়।
– বাস টা চলে?
– হ্যাঁ, চলে তো।
– জানো তো বাবাই, আমিও এখানে একটা বিশাল বাস দেখেছি। বাসের ওপরের তলায় ওঠা যায়।
– কোথায়?
– রাস্তায়। তারপর বাস টা যাচ্ছিল তো। হঠাৎ!!
– কি হল রে?
– পাশের পুকুর থেকে একটা বিশাল মাছ লাফিয়ে বাসটার ভেতরে ঢুকে পড়ল।
– তখন?!
– তখন বাসের সবাই নেমে পালিয়ে গেল। তারপর মাছটাও আবার নেমে জলে চলে গেল।
– তারপর?
– তাপ্পর বাস টা তো আবার যাচ্ছে। হঠাৎ আবার একটা বিশাল মাছ পুকুর থেকে লাফ দিয়ে বাসের ভেতরে ঢুকে পড়ল, আর সবাই ভয়ে পালিয়ে গেল।
– কিন্তু আগেই তো সবাই পালিয়ে গেছিল, বাস তো তাহলে খালি ছিল।
– না গো, তুমি কিচ্ছু বোঝো না। আগের বার তো মাছটা বাসের নিচের তলায় ঢুকেছিল। এবার দোতলায় ঢুকলো।

মিঠিকাহিনী – ৭ (সূয্যিমামার ঘুম)

– মিঠি, শুতে চ, কাল আবার স্কুল আছে, সকাল সকাল উঠতে হবে।
– মাম্মা জানো তো, সকালবেলা সূয্যিমামাও ঘুম থেকে উঠে পড়বে, আর চাঁদমামা ঘুমোতে চলে যাবে।
– আচ্ছা, আর সন্ধ্যে হলে?
– তখন আবার চাঁদমামা উঠে পড়বে ঘুম থেকে, আরা সূয্যিমামা ঘুমিয়ে পড়বে।
– বাহ্, অনেক বকেছিস, এবার শুবি চ।
– জানো তো মাম্মা, সূয্যিমামা আর চাঁদমামা না একটা বিশাল লম্বা গাছের মাথায় ঘুমোয়, অনেএএএক উঁচু।
– তাই নাকি, কাল দেখাস তো কোন গাছ।
– না গো, স্কুলে যাওয়ার সময় দেখতে পাবে না।
– কেন রে?
– ওটা তো অন্য রাস্তায়, স্কুল যাওয়ার রাস্তায় পরে না।

মিঠিকাহিনী – ৮ (জামাই বাবাজীবন)

**শুরুতেই বলে রাখি যে আমার কন্যা মিঠির ভালো নাম পীহুনা, আর সে নিজেই ঠিক করে রেখেছে যে ভবিষ্যৎ-এ তার কন্যার নাম হবে অহনা।

– মাম্মা মাম্মা, কাল টিফিনে কি দেবে?
– বলব না, সারপ্রাইস।
– আমিও বড় হয়ে অহনার জন্য সকালে টিফিন করে দেব।
– আর রাতের খাওয়া?
– রাতেও ফিরে আবার অহনার জন্য খাবার বানিয়ে দেব, তাপ্পর ওকে ঘুম পাড়িয়ে দেব। আচ্ছা মাম্মা, সব আমিই করব? অহনার বাবা কিছু করবে না?
– ছেলেরা কোনো কাজ করে না।
– কিচ্ছু কাজ করে না? আমি তাহলে আলুসেদ্ধ ভাত খেয়ে বেরিয়ে যাব, বর নিজে রান্না করবে।

এইসব শুনে আমি লন্ডন থেকে মিঠি কে ফোন করলাম।

– মিঠি, তোর বর কিচ্ছু করবে না?
– না গো, খালি খাবে আর ঘুমোবে।
– তা, তোর বরের, মানে আমার জামাই-এর নাম টা কি রে?
– জানি না।
– বল না, আমি একটু কথা বলব ওর সাথে।
– উমমম্, রক্তিম।
– রক্তিম! কোথায় থাকে রে সে?
– লন্ডনে, দেখা করে নিও তো একবার।

মিঠিকাহিনী – ৯ (আদর)

লন্ডন ব্রিজ দেখে হোটেলে ফিরব বলে মেট্রোর জন্য দাঁড়িয়েছিলাম আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে। সাথে আমার স্ত্রী ও কন্যা। ভিড় জমছিল একটু, একটা ট্রেনের পর আমাদেরটা আসার কথা।

হঠাৎ দেখি মিঠি ওর মাম্মার জামা ধরে টানছে আর পাশে কারুর দিকে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে। আমি আর বউ দুজনেই ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি কয়েক হাত দূরেই একজোড়া বিদেশী কপোত কপোতী ওই ভিড়ের মধ্যেই আলিঙ্গনাবদ্ধ অবস্থায় গভীর চুম্বনরত।

– কি দেখাচ্ছিস মিঠি?
– (মুচকি হেসে) ওই যে ওদের।
– কেন বলতো? কি করছে ওরা?
– আদর করছে।

আমি আর বউ মুখ চাওয়াচাওয়ি করলাম, এমতাবস্থায় কি জবাব দেব মিঠি কে ভেবে পেলাম না। আগের ট্রেন টা বেরিয়ে গিয়ে আমাদের ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকল। কিন্তু ট্রেনে ওঠার আগে মিঠি দেখি আশেপাশে কাউকে খুঁজছে।

– মাম্মা, ওই যে যারা আদর করছিল না, ওরা না আগের ট্রেনে করেই পালিয়ে গেছে।

মিঠি কে বোঝানো এখন একটু শক্ত যে পালিয়ে গিয়ে বাঁচা যায় না সোনা! যাই হোক, ট্রেনে উঠলাম। মিঠি ওর মায়ের সাথে বসল, আমি রইলাম দাঁড়িয়ে, ট্রেন চলতে শুরু করল।

ঠিক পরের স্টেশনে আমার পাশে উঠে দাঁড়াল এক দম্পতি। কিন্তু মুশকিল টা হল যে তারা দুজনেই ভদ্রমহিলা এবং তারাও চুম্বনক্রীড়ায় মেতে উঠল। আমি পাশ ফিরে মিঠির দিকে তাকিয়ে দেখি যে সে গোগ্রাসে সেই দৃশ্য গিলতে ব্যস্ত। আমাকে দেখেই হেসে লজ্জায় মুখ লুকিয়ে ফেলল মায়ের কোলে। যদিও তার লজ্জার কারণ বোঝার মতো বয়স হয়েছে কিনা আমার সন্দেহ, এই কদিন আগেই চার পূর্ণ করেছে।

||

আমার ফচকে বুদ্ধি তো মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল অনেকক্ষণ, তার ওপর মিঠিকাহিনীর জন্য টপিকও পাচ্ছিলাম না বেশ কিছুদিন ধরে, তাই বাড়ি ফিরতেই বসলাম মিঠি কে নিয়ে।

– মিঠি, স্টেশনে কি সুুন্দর বেবি দের আদর করছিল না! আমিও তো তোকে আদর করি, হামি খাই।
– ওটা বেবি নয় বাবাই, ওটা ওর বউ ছিল।
– তুই কি করে জানলি?
– আমি তো দেখেছি লন্ডনে অনেকেই তো বউ কে আদর করে।
– কিন্তু তুই বুঝছিস কি করে ওটা ওর বউ ছিল?
– আরে বাবা, অনেকদিন আগে ওরা দুজনে একসাথে একটা বিয়েবাড়িতে খেতে গেছিল। ব্যাস, ওরা বর বউ হয়ে গেল। সেইজন্যই তো আদর করছিল। বিয়ে করলে আদর করতে হবে না? তুমি কিচ্ছু জানো না।

মিঠির এই লজিক বাস্তবে ঘটলে গোটা দুনিয়াটাই আজ ওলট পালট হয়ে যেত।

যাই হোক, আমার দুষ্টু বুদ্ধি মাথায় চাপল।

– শোন না মিঠি, তুই ইন্ডিয়া তে ফিরে দাদান কে বলবি যে লন্ডনে সবাই চারিদিকে বউ কে আদর করে, আর কিরকম করে আদর করে দেখিয়ে দিবি। আর হ্যাঁ, যখনই জল বা দুধ খাবি, আগে গ্লাস টা দাদানের গ্লাসের সাথে ঠেকিয়ে বলবি “চিয়ার্স”।

এগুলো শিখিয়েই বউয়ের মুখ ঝামটা খেয়ে গেলাম যে আমি নাকি নিজের হাতে মেয়ে কে বিগড়োচ্ছি। কি করব বলুন, বাবা হয়ে কিছু তো কর্তব্য থাকে নাকি সন্তানের প্রতি।

যাই হোক, পরের দিন অফিস থেকে ফিরে দেখি বউয়ের মুখ ভার, আর মিঠি ওর মাম্মার কাছে খেতে বসে মুচকি মুচকি হাসছে। বুঝলাম কিছু একটা কেস পাকিয়েছে।

গিন্নি বলে উঠল,

– আজকে বাবা কে ফোন করেছিলাম, তোমার শেখানো বুলি এই মেয়ে শুনিয়েছে ওর দাদান কে।
– বাহ্! কি বলল ও? গুছিয়ে বলতে পেরেছে?
– হ্যাঁ, বলল যে “দাদান জানো তো, বাবাই না এখানে ট্রেনে উঠে সবাই কে আদর করে”।

মুখ ঘুরিয়ে তাকাতেই মিঠি জলের গ্লাস টা তুলে ধরে বলে উঠল,

“বাবাই, চিয়ার্স!”

মিঠিকাহিনী – ১০ (বাপের বিয়ে)

আমাদের ষষ্ঠ বিবাহবার্ষিকীর পুণ্যলগ্নে আমার বউ টেনে বার করল সেই কালজয়ী অ্যালবাম। বাংলা গানের নয়, আমাদের বিয়ের। তাতে মালাবদল থেকে সিঁদুরদান সব ইভেন্টের ছবি আছে, কিন্তু সবই দ্বিতীয় বা তৃতীয় রিটেকে তোলা। তা এই অ্যালবাম দেখবার আজকের স্পেশাল মজাটা হল যে সাথে মিঠিও উৎসুক দর্শক। তিন-চার পাতা ধৈর্য ধরে দেখবার পর আমার কন্যা মুখ খুললেন।

– আচ্ছা বাবাই, এই বিয়ে টা কোন বাড়ি তে হচ্ছিল?

– এটা তো তোর দাদানের বাড়ি তে। আসলে বিয়ের আগে মাম্মা তো নিজের বাড়ি তে থাকত, আর আমি আমার বাড়ি তে।

– মাম্মা তখন আসতো না এই বাড়ি তে?

– না রে, এলে আর রক্ষে থাকতো না। আমরা তো দুজনকেই ছোটবেলা থেকে দেখছি, কিন্তু থাকতাম আলাদা বাড়িতেই।

– তুমি চিনতে মাম্মা কে?

– চিনতাম মানে ঐ মুখচেনা আর কি, কথা বলিনি।

– বিয়ের পর কথা বললে?

– না না, মানে আগেও একটু….

আমি হকচকিয়ে গেছি দেখে মিঠি এবার টার্গেট করল আমার সহধর্মিণী কে।

– আচ্ছা মাম্মা, তোমার বিয়ের সময় আমার ছবি নেই কেন? আমাকে নেমন্তন্ন করোনি?

– তুই! তুই তো…. মানে….

– আমি বলছি। আমি এলে তুমি মন দিয়ে বিয়ে করতে, না আমাকে কোলে নিয়ে বসে থাকতে? বিয়ে করার সময় আমায় একলা কোথাও বসিয়ে রাখলে তো পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যেত এই বলে যে “একা একা বসে কি করছ এখানে!”

– পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে কি হত?

– দাদান গিয়ে পুলিশ কে মেরে আমাকে নিয়ে চলে যেত।

– কোথায় নিয়ে যেত দাদান?

– ঐ যে, মাম্মা বিয়ের আগে যে বাড়িতে থাকতো।

মিঠিকাহিনী – ১১ (সিলিপ)

মিঠি আর ওর মাম্মার সোহাগ পর্ব চলছে অনেকক্ষণ ধরেই।

– তোর বিয়েই দেব না মিঠি। আমার গুত্তুপুতুলি টা কে আমার কাছেই রেখে দেব।

– কিন্তু মাম্মা, যদি বর আসে আমাকে নিতে?

– নিয়ে যেতেই দেব না আমার মিঠি কে।

– যদি জোর করে বর আমাকে নিয়ে যায়?

– তাহলে ফাইট করব ওর সাথে।

– কি করে ফাইট করবে? তখন তো তুমি বুড়ি হয়ে যাবে, দাঁত ফোকলা, পাকা চুল।

– তোর বাপ টা ফাইট করবে, ওর তো চিরযৌবন!

এই বলেই মাম্মা আমার দিকে মুখবিকৃতি প্রদর্শন স্বরূপ প্রস্থান করলেন। আমি দেখলাম এই মওকা মিঠির সাথে গপ্পো করার।

– তুই কি সুন্দর করে কথা বলিস রে মিঠি?

– আর তুমি এগুলো মিঠিকাহিনী তে লিখে দাও না?

আমি বিষম খেয়ে ঢোঁক গিলে বললাম,

– তুই কি করে জানলি?

– মাম্মা বলেছে তো।

– অ। আজ বিকেলে কোথায় ঘুরতে যাবি বল।

– পার্কে যাব বাবাই, এই সামনের পার্কটা, সিলিপ চড়ব।

– আচ্ছা, ভালো আইডিয়া। তুই সিলিপ চড়বি, আমি নিচে দাঁড়িয়ে তোকে ধরব।

– আচ্ছা বাবাই, তুমি যখন ছোট ছিলে তখন এই পার্কটা ছিল?

– ছিল তো। আমিও তো ওই সিলিপে চড়তাম ছোটবেলায়।

– তাহলে মাম্মাও তো ছোটবেলায় আসত বলো সিলিপ চড়তে। তখন তোমাদের দেখা হয়নি?

– না না, আমি তোর দাদাই এর সাথে সকালে আসতাম। আর মাম্মা তোর দাদানের সাথে বিকেলে আসত। তাই দেখা হত না।

– তোমরা তাহলে একসাথে সিলিপ চড়তে পারোনি না ছোটবেলায়?

– না রে, বড্ড দুখ্খু।

– আইডিয়া বাবাই! একটা কাজ করো তাহলে।

– কি বল।

– আজ মাম্মাকেও নিয়ে চলো পার্কে।

– কেন বলতো?

– তুমি আর মাম্মা একসাথে সিলিপ চড়বে, আর আমি নিচে দাদান আর দাদাই এর হাত ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখব। 🙂

লেখক ~ অরিজিৎ গাঙ্গুলি

প্রচ্ছদচিত্র অলঙ্করণ ~ Anari Minds

One thought on “মিঠিকাহিনী (আমার খুদে কন্যার কথামৃত)

Comments are closed.