
জোকার
কাল আলফ্রেডের ফোন থেকে কমিশনার কথা বলার পর থেকেই ব্রুস টেনশনে।
পাগলটা ছাড়া পেয়ে গেছে। শুধু ছাড়া পেয়েছে তাই নয়, কমিশনার গর্ডনের কাছে ডিমান্ড করেছে একটা হেলিকপ্টার! তাকে নিয়ে যাবার জন্যে। কোথায়? কোথায় আবার, ওয়েন ম্যানর। বুড়ো আলফ্রেড ছাড়া সেখানে যখন আর কেউ থাকেই না, বাড়িটা সে ব্যবহার করলে ক্ষতি কী! কমিশনারের অবশ্য এতসব দাবি না মানলেও চলত। কিন্তু ব্রুস অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। পাগলটার দাবি না মানলে সে ব্রুসের পরিচয় জনসমক্ষে প্রকাশ করে দেবে, যেটা ব্রুস এখনও চায়না, একেবারেই।
কিন্তু অনুমতি দিলেও, মনটা উচাটন হয়ে আছে যে। সকালের ইনফিউশনটাও বিস্বাদ লাগছে কেমন। ফোনটা বাজল। আবার আলফ্রেড। এবার একটু চিন্তাই হচ্ছে তার।
– হ্যালো।
– এখনো সিরিয়াস?
মানে কী! এই পাগলটা তার ফোন নাম্বার পেল কী করে? ওদিকের লোকটা কিন্তু ঠিক বুঝেছে ব্রুস কী ভাবছে।
– ফোনটা পেয়ে কি সত্যি অবাক হলে ব্রুস? তুমি জানতে না আমাকে এই বাড়িতে ঢুকতে দেবার আগে, আলফ্রেডের কী হবে?
– ত তুমি কি আলফ্রেডকে মেরে ফেলেছো…
– ধুসস্। হি মেকস আম্যাজিং স্টেকস ম্যান। মাইরি মালটাকে তো তুমি প্রায় সতী সাবিত্রী বানিয়ে রেখেছিলে, আপাতত তিনটে বীয়ার আর চারটে টাকিলা শট মেরে পড়ে আছে আমার কোলে মাথা রেখে।
– কী চাই বল তো তোমার? ইউ ক্যান হ্যাভ মাই সিটি।
– না হে, গথাম আর পোষাচ্ছে না।
হটাৎই বিষাদ ভর করেছে পাগলের গলায়। ব্রুস চুপ করেই থাকে। শহরটা তো তারও পোষায়নি, জোকার ঠিক বলেছিল, দরকার ফুরিয়ে গেলে লোকজন তাকেই দূরে সরিয়ে দেবে। মনে মনে সেও চাইছে বোধহয় একটা নতুন শুরুওয়াত। এই লুনাটিককে ছাড়া সেটা হয়তো হবার নয়। ওপাশে কথা শোনা যায় আবার।
– তার চেয়ে একটা প্ল্যান করি চলো।
– প্ল্যান আর তুমি! ইট্স আ ব্যাড জোক। ইউ আর এজেন্ট অফ কেওস!
– এক্সাক্টলি। বাট তার জন্যে শান্তশিষ্ট নিয়মনিষ্ঠ জায়গা চাই একটা। সেটা তুমি খুঁজে দেবে।
– সে তো তুমি নিজেই পারো। আমি কেন খামোখা।
– উফফ। ভালোই জানো, আমি আর তুমি, ডেস্টাইনড টু ডু দিস, চিরকাল। আমাকে ছাড়া তুমি অসম্পূর্ণ, তোমাকে ছাড়া আমি।
– হুম, তা ঠিক। এখানে তোমার আরেকটা বাণী আছে খেয়াল করিয়ে দিই।
– কোনটা বলতো?
– ঐযে, ভালো কাজ কখনো ফ্রিতে করিও না।
– বটে। তার জন্যে ভাবনা কী। আমার লোকশিক্ষা হয়ে গেলে, তুমি বরাবর যা পেয়ে এসেছো তাই পাবে’খন। তবে কিনা…
– আবার কিন্তু কিসের?
– ক্লাইম্যাক্সটা ঝুলিও না। তীরে এসে তরী ডোবানোর মত, ওই নোলান ছোঁড়াটা যেমন আমাকে টাঙিয়ে দিলে একটা দশতলা বাড়ি থেকে! ওটা বড্ড গায়ে লাগে।
– আহা, তা সাড়ে আটশ ফিটের গ্ল্যামারাস হাইরাইজ চলবে কী?
– চলতে পারে। তবে এসব ব্যাপারে আর রিস্ক নিতে চাইনা, রেইকি করে নিতে চাই। তুমি অ্যাড্রেস দিয়ে দিও।
– আলবাত। লিখে নাও তাহলে। দ্য ফরটি টু, চৌরঙ্গী। কলকাতা।
~~~∆~~~
লেখক ~ সপ্তর্ষি বোস
প্রচ্ছদ ~ সৌমিক পাল