
ফুলঝুরি
বাঁকড়ায় বসত মেলাটা। প্রথমদিকে জানতাম না, তাই দাদুর সাথে পাড়ার দোকান থেকেই কিনতে যেতাম। কিন্তু পরে বন্ধুর কাছে শুনলাম বাজির স্বর্গরাজ্য হচ্ছে হাওড়ার বাঁকড়া। সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লুম সেইবার। গিয়েই বুঝলাম যে সেখানে ভোজবাজি আর মাগীবাজি ছাড়া প্রায় সব বাজিই পাওয়া যায়। প্রত্যেকটা দোকানেই লম্বা লাইন। সাইকেল বাইকের ভিড় কাটিয়ে দোকানের সামনে অবধি যেতে যেতেই মাধুরী দীক্ষিত মার্কা রঙমশাল হাওয়া। জয়া প্রদার ছবিওয়ালা পানতুবড়ির দিকে আঙুল তুলে দেখালাম। দোকানদার বলল ক বাক্স লাগবে। বললাম একটাই। শুনে আর পাত্তাই দিল না। বাপরে, কী দাপট!
দুর্গাপূজার আলাদা চার্ম থাকলেও ছোট থেকেই কালীপুজোর প্রতি আমার একটু বেশিই টান। হাওড়াতে কালী মন্দিরের আধিক্যই এর মূল কারণ কিনা সেটা জানি না। তবে, এই একদিনের পুজোতেই মনটা একটা আলাদা আনন্দে মেতে থাকত। ভূত চতুর্দশী থেকেই বেশ একটা গা ছমছমে পরিবেশ। বুড়িমার হাতে-গরম চকোলেট বোম, দোদোমা, লঙ্কাপটকার পটর পটর ভুম ভাম আওয়াজে আগেকার কালীপুজোর মস্তিটাই অন্যরকম ছিল। ডেসিবেলের চক্করে বোম পটকা হারিয়ে যাওয়াকে সমর্থন করেছিলাম আমিও, যদিও মন থেকে ওদের মিস করেছিলাম খুব। বায়োলজির টিচার বলেছিলেন যে কানের সামনে মুখ নিয়ে নর্মাল কথা বললেই নাকি ৬৫ ডেসিবেল ক্রস করে যায়, সেখানে বোম কোন ছাড়৷ তুবড়ির আওয়াজেই তো বুক কেঁপে যেত মাঝে মাঝে।
তুবড়ি বলতেই মনে পড়ল অনেক বছর আগেকার কথা। তখন স্কুলেই পড়ি। একদিন তোতন আর সজারু বায়না তুলল যে এবার তুবড়ি বানাবে। আমি ছোট থেকেই ভীতু গোছের। কবে একবার তুবড়িতে মশলা ঠুঁসতে গিয়ে ফেটে দুজন মারা গেছিল শুনেছিলাম। তাই খুব অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজি হলাম, যা আছে ভাগ্যে। এইসব কেসে ফর্মুলা বাতলাবার জন্য কাকা জ্যাঠারা রেডি থাকত সবসময়। লম্বা গল্প শুনিয়ে লাস্টে বলত অনুপাত। ১৬:১২:৪:৪। এই ছিল কাঠকয়লা, লোহাচুর, গন্ধক আর সোরার অনুপাত, তবে কোনটার কত মাপ সে সব ভুলে মেরে দিয়েছি। ছোট একটা দাঁড়িপাল্লা কেনা হল। তাতে ৩৬ খানা এক টাকার কয়েন যোগাড় করে মাপ নেওয়া শুরু হল। তোতনের কাকা তবলা বাজাতেন, তাই ওনার থেকেই পাওয়া গেল তবলা ঠোকার ছোট হাতুড়ি। ওই দিয়েই কাঠকয়লার মিহি গুঁড়ো তৈরির কাজ চলল। মাটির খোল রোদে শুকোতে দিয়ে দুপুর থেকে শুরু হল মশলা ঠাসা। যত আঙুলের চাপ দিয়ে ঠাস হবে, তত ভালো তুবড়ি তৈরি হবে। যুদ্ধ শেষে আমরা বানালাম ১৬ পিস তুবড়ি। সারাদিন খেটে বানিয়ে মনে হল এ মাল আর হাতে ধরে জ্বালানোর দরকার নেই, সাজিয়ে রেখে দি শোকেসে।
সন্ধেবেলা অন্ধকার ঘনিয়ে আসতেই আমাদের ছাদে হল প্রথম টেস্টিং। আশেপাশের ছাদে পানতুবড়ির ভুসসস করে আওয়াজ শুনে ঘাড় ঘোরাতে গিয়েই দেখছি ছাদ অন্ধকার, মানে তুবড়ি খতম। পাঁচিলে বসিয়ে তিনবন্ধু একটাই ফুলঝুরিকে ধরিয়ে শুভ উদ্বোধন করলাম আমাদের স্বরচিত প্রথম তুবড়ির। সোনালি শাখাপ্রশাখার মতো আলোর ফুলকি ছড়িয়ে পড়তে লাগল চারিদিকে। আওয়াজ আর ফোর্স এমন বাড়তে লাগল যে মনে হল এইবার ফেটে যাবে খোলটা। এমন তার উচ্চতা আর বিস্তার যে তুবড়ি রাখা পাঁচিল থেকে সবচেয়ে দূরে থাকা পাঁচিলের কোণে আমরা তিনবন্ধু ছাতা খুলে বসে আছি। মাল আর থামেই না। পাক্কা তিন মিনিট ধরে চলল তার খেলা। শেষে যখন থামল, তখন ২ সেকেন্ডের নিস্তব্ধতা চারিদিকে। তারপরেই আশেপাশের ছাদ থেকে শুরু হল হাততালি। উড়ে আসতে লাগল প্রশ্নবাণ। “ভাই, কোথা থেকে কিনলে? মেটেবুরুজের মাল মনে হচ্ছে! পাঁচিলে রেখো না আর, পাশের বাড়ির জানলায় ফুলকি ঢুকে যাচ্ছে।” এদিকে আমরা তিনজন তখন ওই আঁধারেই ছাতি ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে।
ভূত চতুর্দশীতে মা ঠিক মনে করে চোদ্দ পিদিম লাগাত। ঠাকুমা বেঁচে থাকাকালীন চোদ্দ শাকও খেতাম আমরা সবাই। ওটা না খেলে নাকি ভূতে ধরত। তবে পরের দিকে চোদ্দ শাক কিনতে গেলে দুব্বো ঘাসই বেশি পাওয়া যেত দেখে নিয়ম উঠে গেল। টুনিবালবের চল থাকলেও চাইনিজ ল্যাম্প তখনও বাজারে আসেনি। তবে বেশিরভাগ বাড়িতেই মোমবাতি ছিল ট্র্যাডিশন। ছাদের বাঁদিক থেকে মোম জ্বালাতে শুরু করে ডানদিকে পৌঁছবার আগেই বাঁদিক থেকে সব নিভে যেত। দুতিনটে রাউন্ড মেরে তারপর দুরশালা বলে সব নিভিয়ে দিতাম।
প্রাগৈতিহাসিক যুগের না হলেও মনোরেল বাজি চোখে দেখেছি ছোটবেলায়। লম্বা সুতো বাঁধতে হত দুদিকে কোনও গাছের ডালে বা বাড়ির থামে। দেশলাই বাক্সের মতো সেই বাজিকে সুতোর মধ্যে পুড়ে সলতে ধরালেই সুতো বরাবর সাঁই সাঁই করে আসা যাওয়া করত। এরই ছ্যাঁচড়া ভারসান ছিল ছুঁচোবাজি। গলির মোড়ে যেদিকেই মুখ করে বসাও না কেন, সে শালা ঠিক গোঁত্তা মেরে কারুর লুঙ্গির তলায়, কারুর বাথরুমের জানলা দিয়ে, বা নিজের দিকেই তেড়ে আসত।
তবে ছোটবেলায় আমার বাজিতে হাতেখড়ি হয়েছিল বেশ কষ্টেই। পাঁচফুট লম্বা প্যাঁকাঠির মুখে ফুলঝুরি লাগানো থাকত। সেটাকেই সোজা সামনের দিকে হাত বাড়িয়ে ধরে থাকতাম। এইভাবে সাহস বাড়ত কালীপুজো শেষ হউএ যাওয়ার পর। তখন বায়না জুড়তাম ফুলঝুরি চাই বলে। কিছু দোকানে স্টক ক্লিয়ারেন্সের মাল রাখা থাকত। দাদু নিয়ে আসত কিনে। রবীন্দ্র সদনেও বসত বিশাল বাজির মেলা। কাকার সাথে গিয়ে এক ব্যাগ বাজি নিয়ে আসতাম। তাতে ছোট বড় ফুলঝুরি, চরকি, তুবড়ি, রঙমশাল কী নেই। সাথে শ্যামাপোকা আর মশা মারার জন্য সাপবাজিও থাকত। এঁকেবেঁকে সাপ বেরতো, আর ধোঁয়ার ঠেলায় আমরাও ঘরে পালাতাম। ইলেকট্রিক তার, রঙদেশলাইও বাদ যেত না।
বড় হয়ে একটু সাহস হলো হাতে করে হাউই ছাড়ার। স্যাটাস্যাট হাউই ধরছি হাতে, আগুন লাগিয়ে ছেড়ে দিচ্ছি, কী র্যালা! আকাশে গিয়ে ফেটে তারার মালা তৈরি হচ্ছে। সেই প্যারাশুট কার বাড়ির ছাদে ল্যান্ড করবে মাপছি। চকোলেট বোমের সলতের সামনের দিকটা নখ দিয়ে ঘষে বারুদ ফেলে দিতাম। এইভাবে তৈরি হত টাইম বম্ব। সলতে তে আগুন দিয়ে পালানোর টাইম থাকত এতে। টিনের বড় ড্রামের মধ্যে কালিপটকার চেন ফেলে দিতাম। ভুঁইপটকা ছিল আরেকটা মজার বাজি। দেওয়ালে সজোরে ছুঁড়ে মারলে ফাটত। এরপর এল হাতচরকি। দোদোমার জায়গা নিল সেভেন শটস। বড় হওয়ার সাথে সাথে আমাদের মনেও পাপ ঢুকল। মনে হল মায়ের পুজো করা দরকার প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে। যেই না ভাবা, ওমনি ক্লাব তৈরি হয়ে গেল। শিবপুর নবীন সংঘ। স্কুলেই ছিলাম, তাই নবীন হিসেবে মানিয়েই গেছিলাম আমরা। চাঁদা তোলার মুরোদ ছিল না। পাড়ার কাকুরাই নিজেরা ডেকে ডেকে হাতে টাকা গুঁজে দিতেন, আর জিজ্ঞেস করতেন এবারের থিম কী। প্রথম বছর টাইটানিকের ওপর কালীঠাকুর বসিয়েছিলাম। সে কী ভিড়! উপচে পড়ছে লোক ঠাকুর দেখতে। আমাদেরটা নয়, একই গলিতে বিশাল একটা বাড়ির পুজো হত, সেটা দেখার জন্য। সেই গলিতেই বন্ধুর বাড়ির গ্যারেজের দরজা খুলে হত আমাদের পুজো। দর্শনার্থী শেয়ার করে নিতাম আমরা। ছোট ছোট কচি ছেলেদের কচি ঠাকুর দেখে লোকজন বেশ বাহবাই দিত৷ সেই বাড়িতে গানের জলসাও হত অনেক রাত অবধি। হারমোনিয়ামে “মায়ের পায়ে জবা হয়ে” আর “আমার সাধ না মিটিলো” গানদুটো বেশ কয়েকবার রিপিট হত। আমাদের টাইটানিক ছিল হাতে আঁকা৷ কিন্তু তার জানলাগুলোর পিছনে সিগারেটের রাঙতা দিয়ে তৈরি রিফ্লেক্টর বসানো থাকত। আর তার নিচে থাকত ব্যাটারি দিয়ে জ্বালানো আলো। মনে হত প্রত্যেকটা জানলাতেই আলো জ্বলছে।
তিনবছর বাদেই জল মিশিয়ে আমরা অর্ধযুগজয়ন্তী বর্ষ পালন করে ফেললাম। ছোট কুঁড়েঘরের ভিতর বসল ঠাকুর৷ পুজো আমরাই করতাম। বামুনের ছেলে ছিল অনেকে কটাই, কিন্তু পৈতে তখনও জোটেনি। যদিও পরবর্তীকালে বাবা ঘটা করে পৈতে দিলেও দুদিনের বেশি পরিনি, হেব্বি গরম লাগত ওই পৈতে পরে থাকলে, তবে পিঠ চুলকোনোর জন্য আদর্শ ছিল। যাই হোক, ধুতি পরে বসে পুজোর সরঞ্জাম নিয়ে মন্ত্র বলার চেষ্টা তো করতাম, কিন্তু ভয় লাগত। বড়রা বলত কালীঠাকুরকে নিয়ে ছেলেখেলা করিস না, বড় জাগ্রত ঠাকুর। পাশ থেকে বন্ধু বলত আমরা তো ছোট, তাই ঠাকুর পাপ দেবে না, শুধু চোখ বন্ধ করে মন দিয়ে ডাকতে থাক মা কে, ওতেই পুজো হয়ে যাবে। আমরাও হাত জোড় করে বসে থাকতাম। মাঝে মাঝে শান্তির জল ছিটিয়ে দিতাম। তবে জ্ঞান হওয়ার পর আর ছেলেখেলা করিনি। মীরের একটা লেখা পড়েছিলাম তখন। কালীপুজোর দিন মীরের একটা বন্ধু রাস্তায় লেবু লঙ্কা লাগানো চেন পড়ে থাকতে দেখে সেটা নিয়ে মজা করছিল। ওর বন্ধুরা ওকে বারণ করেছিল যে ওতে যেন পা না দেয়। কিন্তু বন্ধুটা সেটাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে, তাতে চকোলেট বোম লাগিয়ে ফাটিয়ে বিশাল মজা করেছিল। তার পরের দিনই বাইক অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছিল ছেলেটা।
বাড়ির কাছেই তিরিশ ফুট লম্বা কালীপুজো হত একটা ক্লাবে। সবাই বলত দাম্বা কালী। তবে বেশ আলাদা রকমের ছিল ভ্যানিশ কালীর মাঠের পুজো। এতেই ভিড় হত সবচেয়ে বেশি। মন্ডপে রাখা কালীমূর্তি ভ্যানিশ হয়ে সেখানে দেখা যেত রাম লক্ষণ, শিব, দুর্গা, নেতাজী, বিবেকানন্দর মূর্তি। সন্ধেবেলার পর থেকে শুরু হত এই শো। আমরাও অবাক হয়ে দেখতাম যে কীভাবে হচ্ছে এই ম্যাজিক। যেখানে রাখা আছে বিশাল কালীমূর্তি, সেখানেই পরক্ষণে অন্য মূর্তি কী করে চলে আসছে! রহস্য উন্মোচনের জন্য একবার কালীপুজোর সকালে আমি আর বন্ধু মিলে প্যান্ডেলের পিছনের ত্রিপল তুলে ঢুকে পড়লাম ভেতরে। ঢুকেই হাঁ হয়ে গেলাম ভেতরের কলকব্জা দেখে। সবে ভৌতবিজ্ঞানে পড়েছি আলোকরশ্মির প্রতিফলনের চ্যাপ্টার। চোখের সামনেই তার অদ্ভুত অ্যাপ্লিকেশন দেখে অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। কালীমূর্তি বসানো আছে ওর বেদীতেই। তার সামনে লাগানো একটা বিশাল স্বচ্ছ কাঁচ ঠিক পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে। সেই অ্যাঙ্গেলেই একটু দূরে সামনের দিকে আড়াল করে রাখা একটা প্রকান্ড চাকা, যেটা ঘুরতেও পারে মটরের সাহায্যে। চাকার ওপর পার্টিশান দিয়ে তৈরি করা আছে চারটে খোপ, আর সেই খোপেই বসানো শিব, দুর্গা, নেতাজীর মূর্তি। রাতের অন্ধকারে প্রথমে কালীঠাকুরে মাথার ওপর আলো জ্বলে। সবাই তাই কালীকেই দেখে। এরপর শো শুরু হলে কালীঠাকুরের মাথার আলো নিভে যায়।৷ এর ফলে ওর সামনে থাকা কাঁচটা আয়নার কাজ করতে থাকে। তখন কাঁচের সামনে আড়াল করে রাখা বিশাল সেই চাকার ওপর রাখা মূর্তির সামনে আলো জ্বলে যায়। নেতাজীর প্রতিবিম্ব গিয়ে পড়ে কাঁচের সেই আয়নায়, আর দর্শকরা দেখতে পায় কালীর জায়গায় এখন নেতাজী। এরপর আবার আলো বন্ধ করে চাকা ঘুরে গিয়ে আবার আলো জ্বলে। নেতাজীর জায়গায় চলে আসে শিব। এই কর্মকান্ড দেখে সত্যিই গর্ব হয়েছিল সেদিন। বাড়িতে ফিরে বাবা কাকাদের বোঝাতে শুরু করেছিলাম খাতায় এঁকে এঁকে। দেখলাম ওরাও বেশ অবাক। তবে আজ ভ্যানিশ কালীর মাঠের সেই পুজোয় আর কালী ভ্যানিশ হয় না। মাঠের নামটাই শুধু পুরনো দিনের স্মৃতি বহন করে চলে।
একটু যখন বড় হলাম, মানে কলেজে আর কী, তখন কালীপুজোর সন্ধেবেলা বাজি পোড়ানো হয়ে গেলে বন্ধুদের ছাদে বসত আড্ডার ঠেক। আর তাতে একমাত্র বিষয় থাকত ভূতের গল্প। সবাই নিজেদের ঝুলি থেকে বের করে আনত হাড়হিম করা সব অভিজ্ঞতা। কালীপুজোর রাতে শ্মশানে রাত কাটানোর সৌভাগ্য হয়নি, তবে বন্ধুদের মুখে সেইসব গল্প শুনে বেশ গা ছমছম করত। রাত যত বাড়ত, তত জমে উঠত গল্প। দূর থেকে ভেসে আসত কালীপুজোর মন্ত্র আর ঘন্টার আওয়াজ। বন্ধুর তিনতলা বাড়ির ছাদ থেকে দেখা যেত একটু দূরেই সেই পাঁচতলা বাড়ির অন্ধকার ঘরটা। আমরা মাঝে মাঝেই তাকিয়ে দেখতাম সেইদিকে। কোনও এক কালীপুজোর রাতেই নাকি একটা মেয়ে গলায় দড়ি দিয়েছিল ওই ঘরে। তাই সবাই বলত এই বিশেষ দিনেই নাকি আবার দেখা যেতে পারে। বিশ্বাস, অবিশ্বাস আর ভয় মেশানো অনুভূতিতে আমরা তাকিয়েই থাকতাম সেদিকে, যদি একবার দেখা মেলে তেনার। তবে নিরাশ হয়েছিলাম প্রত্যেকবার। শুনেছিলাম প্রোমোটাররাই নাকি এইসব গল্প রটাতো। সত্যিই হয়তো তাই। আজ সেই বাড়ির জায়গাতেই দাঁড়িয়ে বিশাল রেসিডেনসিয়াল কমপ্লেক্স।
এই বিদেশে বসে কালীপুজোর মজা কতটা নেওয়া যায় সেটারই প্ল্যান করছি এখন। মিঠিকেও তো শেখাতে হবে প্যাঁকাঠির আগায় কিভাবে ফুলঝুরি লাগাতে হয়। তবে মেয়ে আমার ওস্তাদ। আগেই বলে রেখেছে ফুলঝুরি ধরিয়ে প্যাঁকাঠিটা কোনও পাঁচিলে গুঁজে দিও, ধরার আর দরকার কী!
~~~♠~~~
© #অরিজিৎ_গাঙ্গুলি
www.anariminds.com
www.facebook.com/anariminds