আনাড়ি টকিজ : পর্ব ৩ : সাউন্ড ডিজাইনিং

আগের দিন বলেছিলাম সাউন্ডের আউটার আর ইনার ওরিএন্টেশনের কথা, আজ বলছি diagetic আর non-diagetic সাউন্ডের কথা। Diagetic সাউন্ড এর সোর্স রিয়ালিস্টিক, অর্থাৎ যে শব্দ পর্দার চরিত্ররাও শুনতে পাবে, শুধুমাত্র অডিয়েন্সের শোনার জন্য নয়। এর উদাহরণ হল সংলাপ এবং ফলি। এর ঠিক উল্টোটাই হল non-daigetic সাউন্ড, যার কোন সোর্স আমরা দেখতে পাই না, এবং আমাদের পর্দার চরিত্ররাও যে গুলো শুনতে পারে না। যে কোন আবহ সঙ্গীত অথবা ধরুন কমেডি শো এর লাফটার ট্র্যাক পড়বে এর মধ্যে।

ফেরা

নৈহাটি  স্টেশনে নেমে একটা বড় হাই তুললেন বছর ষাটের চিত্তবাবু, একদম ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ট্রেনে। ভাগ্যিস পাশে বসা ছোকরাটা বিকট শব্দে হাঁচল, আর উনি চোখ খুলেই দেখলেন কাঁকিনাড়ার প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে গাড়ি বেরোচ্ছে। নড়ে চড়ে বসে বাঙ্ক থেকে ছোট সু্টকেসটা নামিয়ে জানলার হাওয়ায় এলোমেলো হয়ে যাওয়া চুলটা ঠিক করতে করতেই নৈহাটি এসে গেল।

লেখক ~ অনির্বাণ ঘোষ

একলা ঘর

আশ্চর্য ব্যাপার! এবারেও কেউ উত্তর দিল না। দীপ কৌতুহলবশত আর একটু এগোতেই দেখতে পেল সামনে ফাঁকা ড্রয়িং রুমে একটা হাল্কা নীলাভ আলো জ্বলছে, আর সেই ঘরেরই শেষ প্রান্তে রাখা একটা বিশাল মিউজিক সিস্টেমে বাজছে সেই গান। সাহস করে ড্রয়িং রুমে ঢুকে দীপ লক্ষ্য করল যে ফ্ল্যাটের মালিক বোধহয় একটু আগেই বাইরে গেছেন।

লেখক ~ অরিজিৎ গাঙ্গুলি

কোড নেম ~ প্রমিথিউস

হঠাৎ ঘটনাগুলো একসূত্রে গাঁথা পড়তে থাকে। এত সঠিক ভবিষ্যৎবাণী, সেই এক নীল চোখ, স্যারের ঘরে থাকা সেই ছবির মুখটা, আর তার সাথে এই অমোঘ আকর্ষণ তার ভবিষ্যতের প্রতি, মানুষের প্রতি। 

লেখক ~ স্পন্দন চৌধুরি

কালান্তর

গাড়ির শব্দে সামনের লোহার বড়ো দরজাটা খুলে যে মানুষটা বেরিয়ে এল, অনায়াসে বলে দেওয়া যায় এই মানুষটাই খেতু। হয়তো বাগানেই ছিল। মুখের ভাবটা মোটামুটি একই আছে। বয়সের প্রভাব পড়েছে শরীরে বোঝা যাচ্ছে, কিন্তু এ কী অবস্থা হয়েছে চেহারার! কেমন যেন ক্ষয়ে গেছে মনে হচ্ছে, গালগুলোও কেমন বসা! মাথার অবশিষ্ট যতোগুলো চুল আছে সবই সাদা। চশমার ভেতর দিয়েও চোখের ঘোলাটে ভাবটা বোঝা যাচ্ছে।

লেখক ~ দেবায়ন কোলে

মা

নিমাইয়ের দোকান থেকে ৫০ টাকার রসগোল্লা কিনে, সড়াখানা কেঁড়ে আঙুলে ঝুলিয়ে ফিরছিল বঙ্কা। একেই গোটা দশেক বড় রসগোল্লা মানে মহাভোজ, তায় নিমাই আবার বঙ্কাকে ফাউ দেয়।

লেখক ~ দেবপ্রিয় মুখার্জি

অন্তিম যাত্রা

সিনেমা ভালো লাগবে না মন্দ লাগবে সেটা যেমন ছবির ধারাপ্রবাহের ওপর নির্ভর করে, ঠিক সেরম ভাবেই নির্ভর করে সেই ছবির থেকে আপনার নিজের কি এক্সপেক্টেশান। বুঝিয়ে বলি, আপনি সিনেমা হলে স্টুডেন্ট অফ দ্যা ইয়ার দেখতে গেলেন এই আশা নিয়ে যে এখানে একটা ছাত্র প্রচুর পড়াশোনা করে ব্ল্যাক হোল নিয়ে একটা দারুন থিসিস দিয়ে, প্রচুর প্রাইজ ফ্রাইজ পেয়ে একদম একাকার করে দেবে; তারপর গিয়ে দেখলেন অমুক অভিনেতা আর অভিনেত্রী বুট ডুবে যাওয়া বরফের মধ্যে টি শার্ট আর চিকনের কুর্তি পরে নাচছে। আপনি আশাহত হবেনই। কিন্তু যদি উল্টোটা হয় তাহলে একটা শক লাগার মতো ব্যাপার হবে। সব শেষে কি দেখলাম না দেখলাম এসব গুলিয়ে গিয়ে নিজেকে ভালোটা বোঝাতে চেষ্টা করবেন, আপনই জিতবেন।

অর্ধাঙ্গিনী

নীহারিকা কেঁপে উঠে হাতটা শক্ত করে চেপে ধরল, “বিক্রম, আস্তে….!” ঘরের কোণে জ্বলতে থাকা দুটো লাল মোমবাতির স্নিগ্ধ আলো এই মুহূর্তকে যেন আরও রোমাঞ্চকর করে তুলেছে। বিক্রম ছাড়িয়ে নিল ওর হাত, টেনে নিল নীহারিকার মোহময়ী শরীরটাকে নিজের আরও কাছে, পিঠে পড়ল আদরের দাগ, ওষ্ঠ অধরের এক নৈসর্গিক খেলায় মেতে উঠল দুটো শরীর।